নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর: প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর ‘বালি ব্যবসায়ী’ সৌরভ রায়ের মেদিনীপুরের বাড়ি ছাড়লেন ইডি আধিকারিকরা। তাঁদের সঙ্গে ছিল দু’টি ব্যাগ। অনুমান করা হচ্ছে ব্যাগ দুটিতে রয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। তবে স্বাভাবিক ভাবেই গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি ইডি আধিকারিকরা।
সোমবার সকাল ৮টা থেকে বালি পাচার কাণ্ডে তদন্তে নেমে ইডির একটি দল তল্লাশি অভিযান শুরু করে বালি ব্যবসায়ী সৌরভ রায়ের মেদিনীপুরের অদূরে যমুনাবালীর বাড়িতে। ৩টি গাড়িতে করে আসেন ইডি আধিকারিকরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ ইডির আরও একটি দল এসে পৌঁছয় ওই বাড়িতে। এই গাড়িতে ৩ জন আধিকারিক ছাড়াও সিআরপিএফ জওয়ানরা ছিলেন। তার পরই ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান, নথিপত্রে কোনও গোলযোগ পাওয়া গিয়েছে কিংবা তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নথি বা নগদ টাকা উদ্ধার হয়ে থাকতে পারে। উল্লেখ্য, ঝাড়গ্রামে একাধিক বালি খাদান রয়েছে সৌরভের। লালগড়ে রয়েছে বিশাল বাংলো ও অফিস। মূলত সেখান থেকেই ব্যবসা পরিচালিত হয়।
যমুনাবালীর প্রাসাদোপম বাড়িতে মা, স্ত্রী এবং একমাত্র ছেলে-বৌমাকে নিয়ে থাকেন সৌরভ। এদিন অবশ্য সৌরভ বাড়িতে নেই। তিনি কলকাতায় নিজের একটি কার্যালয়ে আছেন। সেখানে তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, ঠিকাদার হিসেবেই উত্থান বছর ৫০-র সৌরভের। মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, কলকাতায় তাঁর একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে। কোটি কোটি টাকার জমিজমাও রয়েছে বলে সূত্রের খবর।
গত ২-৩ বছর ধরে বালি ব্যবসায় নাম লেখানোর পর তিনি ফুলেফেঁপে উঠেছেন বলে এলাকাবাসীদের দাবি। শাসকদলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী ও পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার বিষয়টিও সর্বজনবিদিত। তাই সিও-র মাধ্যমে বৈধভাবে বালি ব্যবসার আড়ালে জাল সিও তৈরির মাধ্যমেই তাঁর বাড়বাড়ন্ত কিনা এদিনের তদন্তে সেইসব বিষয়ই খতিয়ে দেখা হয় বলে মনে করা হচ্ছে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ব্যবসায়িক নথিপত্রও খতিয়ে দেখা হয়। বেআইনি লেনদেনের বিষয়টি ইডি-র নজরে আসার পরই এই তল্লাশি অভিযান বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।