পারুল খামারিয়া | কলকাতা | ৩০ অক্টোবর ২০২৫
জগদ্ধাত্রী পুজোর অষ্টমী তিথিতেই দেশজুড়ে পালিত হলো গোপাষ্টমী। কার্তিক মাসের শুক্লা অষ্টমীতে ভগবান কৃষ্ণকে তাঁর পালক-পিতা নন্দ মহারাজ প্রথমবার গরু চরানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন — সেই ঐতিহ্যের স্মরণে প্রতি বছর পালিত হয় এই দিনটি।
এই উপলক্ষে ভারতীয় কিষাণ সংঘ (Bhartiya Kisan Sangh)-এর পক্ষ থেকে দেশজুড়ে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে, নানা কর্মসূচি আয়োজিত হয়।
🕉️ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট
হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, এই দিনটি গো-পূজা ও কৃষ্ণ-পূজার জন্য বিশেষ শুভ বলে মনে করা হয়। ভক্তরা গোশালায় গিয়ে গরুকে সাজিয়ে পুজো দেন, বিশেষ পশুখাদ্য খাওয়ান এবং আশীর্বাদ কামনা করেন।
গোপাষ্টমী কৃষ্ণভক্তদের কাছে যেমন ধর্মীয় তাৎপর্যপূর্ণ, তেমনি কৃষিজীবী সমাজের কাছেও এটি ঐতিহ্যবাহী দিন — কারণ কৃষিকাজে গরুর ভূমিকা ভারতের গ্রামীণ জীবনের সঙ্গে দীর্ঘকাল ধরে যুক্ত।
আজকের রাশিফল | বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫ | ১২ কার্ত্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
🧾 ভারতীয় কিষাণ সংঘের বার্তা
সংগঠনের পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের সাধারণ সম্পাদক আশিস সরকার বলেন, “গোপাষ্টমী ভারতীয় কিষাণ সংঘের চারটি অবশ্য পালনীয় দিনের একটি। দেশি গরুর দুধ, গোবর ও গোমূত্র কৃষিকাজে বিশেষ উপকারী। গো-মাতাকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।”
সংগঠনের প্রচার প্রমুখ ও ‘ভারতীয় কিষাণ বার্তা’ পত্রিকার সম্পাদক মিলন খামারিয়া জানান, “দেশি গরু পালন করে আয় সম্ভব। শহরের মানুষও একত্রে জমি কিনে গো-পালন করতে পারেন।” রাজ্য সভাপতি অনিমেষ পাহাড়ি বলেন, “দেশি গরুর প্রজাতি সংরক্ষণ করে প্রাকৃতিক কৃষি ফিরিয়ে আনতে হবে। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক কৃষির জন্য ক্ষতিকর।”
🌾 গোপাষ্টমীর কৃষি-সংযোগ
বিশেষজ্ঞদের মতে, গোপাষ্টমী কৃষিজীবী সমাজের একটি পুরনো ঐতিহ্য। গ্রামীণ অর্থনীতিতে গরুর দুধ, গোবর ও শ্রম সব সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
কৃষি অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা মনে করেন, এই ধরনের দিনগুলি মানুষকে গ্রামীণ স্বনির্ভরতা ও প্রাকৃতিক কৃষি পদ্ধতির গুরুত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
📿 সময় ও পালন
এই বছর গোপাষ্টমীর তিথি ছিল বুধবার সকাল ৯টা ২৩ থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৬ মিনিট পর্যন্ত।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ভারতীয় কিষাণ সংঘের স্থানীয় শাখাগুলির উদ্যোগে গো-পূজা, আলোচনা সভা এবং সচেতনতা প্রচার অনুষ্ঠিত হয়।
🧭 সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ
গোপাষ্টমীকে কেন্দ্র করে ধর্মীয়, কৃষি ও সামাজিক পরিসরে নানাভাবে বার্তা দেওয়া হয় —
একদিকে ধর্মীয় বিশ্বাসের ধারায় গো-পূজা ও কৃষ্ণভক্তির চর্চা, অন্যদিকে কৃষিজীবী সমাজে দেশি গরু সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক কৃষির বার্তা।