ওয়েব ডেস্ক: দক্ষিণ কলকাতার আলিপুর থানার বিদ্যাসাগর কলোনিতে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য। মৃত কিশোরী সঞ্জনা সিংহ, যিনি আরজি কর-কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের ভাগ্নি। দিন দশেক আগে ঘরের আলমারি থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাটি আত্মহত্যা না খুন— তা ঘিরে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।
⚖️ খুনের অভিযোগ ছেলের-বৌমার বিরুদ্ধে
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার ঠাকুমা প্রতিমা সিংহ আলিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নিজের ছেলে ভোলা সিংহ ও বৌমা পূজা সিংহের বিরুদ্ধে। তাঁর দাবি, “ছেলে-বৌমা মিলে আমার নাতনিকে খুন করেছে।”
প্রতিমা দেবীর আরও অভিযোগ, সঞ্জনা প্রায়ই লুকিয়ে তাঁর কাছে এসে জানাত, বাবা ও সৎমা মিলে তাকে মারধর করত। পড়াশোনার অজুহাতে বা সামান্য কারণে প্রায়ই শারীরিক নির্যাতন করা হত বলে তাঁর দাবি।
🧩 পারিবারিক সম্পর্ক ও অতীত
তদন্তে উঠে এসেছে, মৃতার বাবা ভোলা সিংহের প্রথম স্ত্রী ছিলেন ববিতা রায় — আরজি কর-কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায়ের দিদি। ববিতার মৃত্যুর পর ভোলা বিয়ে করেন তাঁর শ্যালিকা পূজা রায়কে, অর্থাৎ ববিতার বোন এবং সঞ্জনার মাসি। সেই পূজাই পরবর্তীতে হয়ে ওঠেন সঞ্জনার সৎমা। পূজা কলকাতা পুলিশের কর্মী। পরিবারের এই সম্পর্ক ও অশান্তি নিয়েই নাকি নিত্যদিন চলত তিক্ততা।
📅 ঘটনার বিবরণ
গত ২০ অক্টোবর, কালীপুজোর রাতে সঞ্জনার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় আলিপুরের বিদ্যাসাগর কলোনির বাড়ি থেকে। আলমারির হ্যাঙ্গারে আংশিক ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় দেহ। প্রাথমিকভাবে পুলিশ এটিকে আত্মহত্যা হিসেবে নথিভুক্ত করলেও, এলাকাবাসীর দাবি— সঞ্জনা নিয়মিত নির্যাতিত হত। ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা ভোলা ও পূজাকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখান।
🧬 তদন্তে নতুন মোড়
ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে আত্মহত্যার ইঙ্গিত মিললেও, ঠাকুমার খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে ফের তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এখন দেখা হচ্ছে, কিশোরীর দেহ উদ্ধার, পারিবারিক অশান্তি ও পূর্ব নির্যাতনের অভিযোগের মধ্যে কোনও যোগসূত্র আছে কি না।
🚨 পুলিশের বক্তব্য
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, “মামলাটি নতুন করে রেজিস্টার করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে পুনরায় পোস্টমর্টেম রিপোর্ট যাচাই করা হবে।” তদন্তে পারিবারিক বিবাদ, মানসিক চাপ ও পূর্ব নির্যাতনের সম্ভাব্য যোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।