ধানের শীষ পচা রোগের আক্রমণ! সময় মতো স্প্রে করলেই রক্ষা সম্ভব ফসল

✍️ হরষিত মজুমদার

এবার রাজ্যের একাধিক জেলায় ধানের শীষে দেখা দিচ্ছে এক ভয়ংকর ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ — ব্যাকটেরিয়াল প্যানিকল ব্লাইট (Bacterial Panicle Blight), সংক্ষেপে BPB
চাষিরা একে সাধারণত “ধানের শীষ পচা রোগ”, “দানাভরা না হওয়া রোগ”, কিংবা “শীষ শুকিয়ে যাওয়া রোগ” নামে চেনেন। কিছু এলাকায় আবার এই রোগকে “ধানের মুখ পোড়া” বলেও ডাকা হয়।

রোগটি দেখা দিলে শীষের দানাগুলি ঠিকভাবে ভরতে পারে না, অনেক সময় বাদামি বা কালচে দাগ পড়ে যায়। ফলস্বরূপ, ফলনের পরিমাণে বড়সড় প্রভাব পড়ে।
উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে — বিশেষ করে ফুল ফোটার সময় যদি বৃষ্টি বা শিশির বেশি পড়ে।


🟡 ধানের শীষ পচা রোগের প্রধান লক্ষণ:

  • শীষের দানাগুলি বাদামি বা কালচে হয়ে যায়।
  • দানার ভেতর ফাঁকা থেকে যায়, কুঁচকে যায়।
  • আক্রান্ত শীষ শুকিয়ে যায়, ফলে ফলন অনেক কমে যায়।

🧫 কেন হয় এই রোগ:

এই রোগের মূল কারণ Burkholderia glumae নামক ব্যাকটেরিয়া।
অতিরিক্ত নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ, জমিতে জল জমে থাকা এবং একই জাতের ধান একটানা চাষ করার ফলেই এর প্রকোপ বাড়ে।


💧 ধানের শীষ পচা রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ:

সময় মতো নিচের যেকোনও একটি স্প্রে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায় —
1️⃣ Streptocycline – ১ ট্যাবলেট ১০ লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন।
2️⃣ Isoprothiolane (Fuji-One / Simba) – প্রতি লিটার জলে ১ মিলি মিশিয়ে স্প্রে করুন।
3️⃣ Copper Hydroxide 77% WP – প্রতি লিটার জলে ২ গ্রাম গুলে স্প্রে করুন।

এই ব্যাকটেরিসাইড বা মিশ্র ফাঙ্গিসাইড গুলি রোগের ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক উভয়ের উপর কার্যকর।


🌱 কৃষকদের জন্য পরামর্শ:

  • জমিতে জল জমে থাকতে দেবেন না।
  • ফুল ফোটার সময় অতিরিক্ত নাইট্রোজেন সার ব্যবহার করবেন না।
  • পরবর্তী মৌসুমে সার্টিফায়েড, রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করুন।
  • একই জমিতে একই জাতের ধান বারবার চাষ এড়িয়ে চলুন।
  • প্রতিদিন মাঠ পর্যবেক্ষণ করুন, প্রাথমিক লক্ষণ দেখলেই স্প্রে করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *