দিল্লি: জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (JNU) ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (JNUSU Election 2025) একচেটিয়া জয় ছিনিয়ে নিল বাম ছাত্র জোট। এবারের নির্বাচনে চারটি কেন্দ্রীয় পদেই জয়ী হয়ে SFI-AISA-DSF জোট কার্যত এবিভিপিকে (ABVP) শূন্য করে দিল।
গত এপ্রিল মাসে একটিমাত্র পদে জয় পেয়েছিল এবিভিপি। কিন্তু মাত্র সাত মাসের ব্যবধানে সেই হারানো জমি পুনরুদ্ধার করে জেএনইউ ক্যাম্পাসে নিজেদের রাজনৈতিক প্রভাব আরও দৃঢ় করল বাম ছাত্র সংগঠনগুলি।
🔴 চারটি কেন্দ্রীয় পদেই বামদের ঝড়ো জয়
সভাপতি পদে জিতেছেন আইসা (AISA) প্রার্থী অদিতি মিশ্র, সহ-সভাপতি পদে এসএফআই (SFI)-এর কে গোপিকা, সাধারণ সম্পাদক পদে ডিএসএফ (DSF)-এর সুনীল যাদব, এবং যুগ্ম সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন আইসা-র দানিশ আলি।
- সভাপতি অদিতি মিশ্র পেয়েছেন ১,৯৩৭ ভোট — এবিভিপি’র বিকাশ প্যাটেলকে ৪৪৯ ভোটে পরাজিত করেন।
- সহ-সভাপতি কে গোপিকা পেয়েছেন ৩,১০১ ভোট, এবিভিপি’র তানিয়া কুমারিকে বড় ব্যবধানে হারিয়েছেন।
- সাধারণ সম্পাদক সুনীল যাদব এবিভিপির রাজেশ্বর কান্ত দুবেকে ২৪ ভোটে হারান — এখানেই একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যায়।
- যুগ্ম সম্পাদক দানিশ আলি ২,০৮৩ ভোটে জিতে বাম প্যানেলের জয় সম্পূর্ণ করেন।
ভোটার উপস্থিতি ছিল প্রায় ৬৭ শতাংশ, যা ছাত্রছাত্রীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের দিকেই ইঙ্গিত করছে।
📢 অদিতি মিশ্র: “ছাত্রসমাজ চায় জবাবদিহিমূলক নেতৃত্ব”
নির্বাচনী প্রচারে অদিতি মিশ্র ক্যাম্পাসে নানা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু তুলে ধরেছিলেন। তাঁর প্রচারের মূল বিষয় ছিল—
- শিক্ষার মান নিম্নমুখী হওয়া,
- বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার ক্রমবর্ধমান খরচ,
- হোস্টেলে নজরদারি বৃদ্ধি,
- এবং শিক্ষাখাতে তহবিল কমানো।
তিনি অভিযোগ তোলেন, এবিভিপি কর্পোরেট সমর্থনে টিকে আছে এবং বর্তমান সরকার উচ্চশিক্ষাকে সাধারণ পরিবারের নাগালের বাইরে ঠেলে দিচ্ছে।
জয়ের পর অদিতি বলেন,
“এই ফলাফল প্রমাণ করে ছাত্রসমাজ অন্তর্ভুক্তিমূলক, গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক নেতৃত্ব চায়। বাম ছাত্র রাজনীতি সেই চাহিদাকেই প্রতিফলিত করেছে।”
🗳️ এবিভিপির পতন, বামদের পুনরুত্থান
২০২৪ সালের নির্বাচনে একটিমাত্র পদে জয় পেয়েছিল এবিভিপি — যুগ্ম সম্পাদকের পদে বৈভব মীনা। সেই তুলনায় এবারের ফলাফল সম্পূর্ণ উলটপুরাণ। এবিভিপিকে শূন্যে নামিয়ে AISA-SFI-DSF জোট ক্যাম্পাসে আবারও নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করল।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এবারের ফলাফল শুধু জেএনইউ নয়, দেশের ছাত্র রাজনীতির প্রবণতাতেও বড় ইঙ্গিত বহন করছে।