বরুণ কৃষ্ণ কুণ্ডু, সহ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন), কাকদ্বীপ মহকুমা
ওলকপি একটি অল্পদিনের শীতকালীন সবজি। মাত্র ৪০–৬০ দিনে ফসল সংগ্রহ করা যায়।
বিঘা প্রতি সহজেই ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত লাভ সম্ভব। অগ্রিম চাষে আকার ছোট হলেও বিক্রি সহজ।
এতে ভিটামিন A, C, E, K ছাড়াও রয়েছে অ্যান্টি–ক্যানসার ও অ্যান্টি–ডায়াবেটিক গুণ।
সালফোরাফেন ও আইসোথায়োসায়ানেট রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়।
বীজ বপনের সময় ও জাত নির্বাচন
আগস্ট–অক্টোবর বীজ বপন, সেপ্টেম্বর–নভেম্বরে চারা রোপণ।
জনপ্রিয় জাত—হোয়াইট ভিয়েনা, পার্পল ভিয়েনা, পুসা বিরাট, পাহুজা রকেট, সোলজার, সদাশিব, লার্জ গ্রিন।
বীজতলা প্রস্তুতি
• প্রতি বর্গমিটারে ২.৫ কেজি গোবর + ১৫ গ্রাম পটাশ
• ১ সেমি গভীর গর্তে ১৫×৫ সেমি দূরত্বে বীজ
• বিঘা প্রতি বীজ লাগে ১২৫ গ্রাম
• ৫–৬টি পাতা হলে বিকেলে প্রতিস্থাপন
জমি প্রস্তুতি ও সার ব্যবস্থাপনা
• ৩–৪ বার সেচ দিয়ে জমি চাষ করুন
• বিঘা প্রতি — ৫০ কেজি খোল + ১ কেজি Trichoderma + ১ কেজি Pseudomonas
• শেষ চাষে — ২০ কেজি ১০:২৬:২৬
• ২৫×২৫ সেমি দূরে চারা
• প্রতি ৪–৫ দিনে সেচ
• ১০ ও ২০–২৫ দিনে ৪–৫ কেজি ইউরিয়া
আগাছা ও সেচ
• ৪০ দিন নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার
• অনিয়মিত সেচ বা বোরনের ঘাটতিতে কাণ্ড ফেটে যেতে পারে
রোগ ও পোকার দমন
জাব পোকা/ল্যাদা পোকা: কাইট @ ১ মি.লি./লিটার।
ল্যাদা হলে মিসাইল ০.৫ গ্রাম বা বায়োলেপ ১.৫ গ্রাম।
গোড়া পচা: Tata Master বা Ridomil Gold @ ২.৫ গ্রাম।
একপেশে রোগ: কণিকা @ ১.৫ গ্রাম বা কোসাইড @ ২ গ্রাম।
গদামূল: মাটি জীবাণুমুক্ত, জৈব সার, সেচ নিয়ন্ত্রণ।
অনুখাদ্য স্প্রে
পাতা ফ্যাকাশে হলে — এগ্রমিন/মাল্টিপ্লেক্স/ট্রাসেল @ ৩ গ্রাম।
পুষ্টি ও কাণ্ডের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
ফসল সংগ্রহ ও ফলন
গাটি ৬–৮ সেমি হলে সংগ্রহ করুন।
বিঘা প্রতি ফলন ৩৫–৪০ কুইন্টাল।
আগাম জাত হলে একই জমিতে ২ বার চাষ সম্ভব।
লাভের হিসেব
মাত্র ৪০–৬০ দিনে বিঘা প্রতি ৬০,০০০ টাকারও বেশি লাভ সম্ভব। লাভজনক শীতকালীন সবজির মধ্যে ওলকপি প্রথম সারির ফসল।
দ্রষ্টব্য: প্রদত্ত পরামর্শগুলো সাধারণ নির্দেশিকা—স্থানীয় মাটির ধরন, আবহাওয়া ও বাজারকে ধরা হয়ে ফলন ও সারের পরিমাণ সামঞ্জস্য করুন। কীটনাশক ব্যবহারের সময় লেবেল নির্দেশিকা মেনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসরণ করুন।