🌌 মহাকাশে ‘বারবিকিউ চিকেন’: চীনের মহাকাশ অভিযানে নতুন দিগন্ত

🛰️ পৃথিবী নয়, মহাকাশেই এবার রান্না

চীনের মহাকাশ গবেষণায় যুক্ত হলো নতুন এক অধ্যায়। এবার পৃথিবীর রান্নাঘর নয়, বরং মহাকাশের কক্ষপথেই রান্না হলো গরম মুরগির মাংস ও স্টেক!চীনের মানববাহী মহাকাশ কর্মসূচির ইতিহাসে এটি প্রথম, যেখানে শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনে একটি বিশেষভাবে তৈরি “স্পেস ওভেন”-এ মুরগির ডানা ও স্টেক গ্রিল করেছেন।

🔥 ভিডিও ভাইরাল

২৮ মিনিটে প্রস্তুত মহাকাশের খাবারচীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (ACC) প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গেছে, নভোচারীরা প্রায় ২৮ মিনিট ধরে ওভেনে মাংস রান্না করেন এবং শেষে সেটি একসঙ্গে ভাগ করে খেয়ে নেন। দৃশ্যটি দ্রুত ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এই উন্নত স্পেস ওভেন-এ রয়েছে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও ধোঁয়াবিহীন প্রযুক্তি, যা একটানা ৫০০ বার পর্যন্ত কার্যক্ষম বলে জানিয়েছে চীনা মহাকাশ সংস্থা।

⚙️ মহাকাশের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি ‘স্পেস ওভেন’

চীনা সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, মহাকাশের অভিকর্ষহীন পরিবেশে ব্যবহারের জন্য এই ওভেনটি বিশেষভাবে নকশা করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা, ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ এবং খাদ্যকণিকা ছড়িয়ে পড়া রোধ করা সম্ভব হয়।
এর তুলনায়, ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) প্রথম ‘কুকি বেকিং’ পরীক্ষায় নভোচারীদের দুই ঘণ্টা সময় লেগেছিল।
চীনের তৈরি নতুন ওভেন সেই সময় কমিয়ে এনেছে মাত্র ২৮ মিনিটে, যা একটি উল্লেখযোগ্য প্রযুক্তিগত উন্নয়ন।

👩‍🚀 প্রযুক্তির পাশাপাশি মানবিক অগ্রগতি

চীনা মানববাহী মহাকাশ সংস্থা (CMSA) জানিয়েছে, “একসঙ্গে বসে গরম, তাজা খাবার খাওয়া নভোচারীদের মধ্যে মানসিক প্রশান্তি ও দলগত সংযোগ তৈরি করে।”
দীর্ঘ মেয়াদি মহাকাশ অভিযানে মানসিক স্থিতি বজায় রাখা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি খাবারের স্বাদ ও অভিজ্ঞতাও নভোচারীদের মনোবল বাড়াতে সহায়ক।

🍱 মহাকাশে এখন ১৯০ ধরনের খাবার

বর্তমানে তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনে প্রায় ১৯০ ধরনের খাবার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে—যা শেনঝো–৫ যুগের সীমিত প্যাকেটজাত খাবারের তুলনায় বিশাল পরিবর্তন।
এই বৈচিত্র্য দেখায়, চীনের মহাকাশ কর্মসূচি শুধু প্রযুক্তিগত উন্নয়নেই নয়, মানবিক অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রেও দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

🌕 ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি

মহাকাশে ‘চিকেন বারবিকিউ’-এর এই ঘটনা শুধুমাত্র এক রন্ধন পরীক্ষাই নয়—বরং এটি ভবিষ্যতের চাঁদ ও মঙ্গল অভিযানের বাস্তব প্রস্তুতি।
যেখানে মানুষ শুধু টিকে থাকবে না, বরং মহাকাশেও জীবনের স্বাদ উপভোগ করবে—ঠিক পৃথিবীর মতোই।