নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের (RG Kar Hospital Murder Case) অভিযোগ নিয়ে কড়া অবস্থা নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) এবং তাঁর প্রশাসন। যে বা যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের ফাঁসির দাবি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই পুলিশ অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছে। জানা গিয়েছে সঞ্জয় পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার, কাজ করত কলকাতা পুলিশের অধিনেই।
শনিবার একটা নাগাদ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনিত গোয়েল। তিনি এই ঘটনায় অভিযুক্তের যাতে সর্বোচ্চ সাজা হয় সেই চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন। সারা রাত ধরে ঘটনার তদন্ত হয়েছে। খতিয়ে দেখা হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজও। স্বচ্ছ ভাবে গোটা ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট সামনে এলে ঘটনা সম্পর্কে আরও তথ্য জানা যাবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।
এর আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের কড়া অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলে তিনি বলেন ফাঁসির আবেদন করবেন তাঁরা। যে এই কাজ করেছে তার কোনও ক্ষমা নেই। সেই সঙ্গে ফাস্টট্র্যাক কোর্টে মামলা নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তিনি। কেউ যদি সিবিআই তদন্ত চায়, তাতেও রাজ্য প্রশাসনের আপত্তি নেই বলে জানিয়ে দিলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে হাসপাতাল সুপারের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে দেন। আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় কোনও গাফিলতি ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তাঁরা যা করছেন সেটা যুক্তি সংগত। তবে চিকিৎসা পরিষেবাটাও যাতে বিঘ্নিত না হয় তা দেখা উচিত।
এদিকে ধৃত সঞ্জয় রায় কলকাতা পুলিশের অধিনে সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ করত বলে জানা গিয়েছে। এমনকি পুলিশের ওয়েল ফেয়ার বোর্ডের সঙ্গেও যুক্ত ছিল। সেই সূত্রের রোগীদের খোঁজ খবর নেওয়া বা রোগী ভর্তি করানোর জন্য হাসপাতালে আসত সঞ্জয়। এবং হাসপাতালের সর্বত্র যাতায়াত ছিল তার। সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে দালাল রাজ চালানো সহ কিছু অভিযোগ ছিল। এমনকি ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে জানা গিয়েছে সঞ্জয়ের বিকৃত কাম মানসিকতার।
ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে গিয়ে দেখা যায়, ঘটনার দিন রাত আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে হাসপাতালের ওই বিল্ডিংয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় একনজ বিক্ষিপ্ত ভাবে ঘুরছে। তা দেখে হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা কর্মীদের ওই ব্যক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে জানা যায় তার নাম সঞ্জয় রায়। তার পরই সঞ্জয়কে ধরে জেরা শুরু হয়। প্রথমে স্বীকার না করলেও পরে দোষ স্বীকার করে নেয় বলে জানা গিয়েছে।