মহৌষধি শশা: সুগার, ক্যানসার থেকে ওজন, কমিয়ে দিতে পারে অনেকটা

গ্রীষ্ম কালীন রসালো ফল বা ফসল শশা প্রায় ৩ হাজার বছর ধরে চাষ হয়ে আসছে পৃথিবীর বুকে। স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এর উপকারিতার তালিকা বেশ লম্বা। ভিটামিন মিনারেলে ভরপুর শশা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সুগার থেকে ক্যানসারও। ২০১৯ এর FAOSTAT এর তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের মোট উৎপাদিত শশার ৭০ শতাংশ হয় চিনে।

শশাতে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট খুব কম পরিমানে থাকলেও ভিটামিন ও মিনারেলে পরিপূর্ণ। এতে রয়েছে থায়ামিন বা ভিটামিন B1, রাইবোফ্লাভিন বা ভিটামিন B2, নিয়াসিন বা ভিটামিন B3, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড বা ভিটামিন B5, পাইরিডক্সিন বা ভিটামিন B6, ফোলেট বা ভিটামিন B9, ভিটামিন C, ভিটামিন K।

আবার ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, পটাসিয়াম, সোডিয়াম, জিঙ্ক রয়েছে এই শশাতে। এছাড়াও ফাইবার, জল ও ফ্লোরাইড রয়েছে।

আসুন জেনে নেওয়া যাক এই সহজলভ্য ফলে আরও কী কী গুনাগুন রয়েছে-

হাইড্রেশন (Hydration) – গ্রীষ্ম কালে শরীরে জলের যোগান লাগে বেশি। শশাতে থাকে প্রায় ৯৬ শতাংশ জল। তাই শশা শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে শশা (Blood Pressure Regulation) – শশাতে রয়েছে পটাসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফাইবার। এই পুষ্টি উপাদানগুলি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তারা প্রতিদিন শশা পাতে রাখতে পারেন।

রক্তে শর্করার পরিমান কমাতে (Regulating Blood Sugar) – শশা রক্তে সুগারের পরিমান নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে শশা ইন্সুলিন ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে ও ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা কমায়।

ওজন কমাতে শশা (Weight Loss) – এতে থাকে ৯৬ শতাংশ জল এবং এটি কম ক্যালরি যুক্ত খাবার। ১০০ গ্রাম শশা তে থাকে ১৫ ক্যালরি, তাই যাদের ওজন বেশি তারা খাবার খাওয়ার আগে শশা খেতে পারেন। এর ফলে ওজন হ্রাস পাবে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় (Reduce Risk of Cancer) – শশা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে আপনার আয়ু বাড়াতে সাহায্য করে। এর অ্যান্টি ক্যান্সার প্রপাটি শরীরে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রুখে দিতে পারে।

চুল ও নখ ভাল রাখতে (Nail and Hair) – চুল ও নখ ভাল রাখতে শশার গুরুত্ব অপরিসীম। এতে সিলিকা থাকায় তা নখ ভেঙে যাওয়া আটকায় এবং চুল মজবুত করে।

মুখের দুর্গন্ধ (Bad Order) – মুখের দুর্গন্ধ আটকাতে শশা বেশ উপযোগী। অনেকে ক্ষেত্রে মুখে গন্ধ থাকার কারণে সকলের সামনে কথা বলতে লজ্জা পায়। এই ক্ষেত্রে শশা বেশ কাজ দেয়। এতে তে উপস্থিত ফাইটোকেমিক্যাল মুখের ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে।

কোষ্টকাঠিন্য সারাতে (Cure Constipation) – শশায় থাকে প্রচুর পরিমানে ফাইবার ও জল। এই দুই উপাদান কিন্তু কোষ্টকাঠিন্য সারাতে সাহায্য করে। তাই যাদের এই ধাত রয়েছে তারা প্রতিনিয়ত একটি শশা খাবার পাতে রাখতে পারেন।

হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে (For Good Bone Health) – শশায় উপস্থিত ক্যালসিয়াম আমাদের হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া শশা ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। তাই হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে শশাকে উপেক্ষা করা যায় না।

কিডনি পাথর সারাতে (Kidney Stone) – শশার প্রচুর পরিমান জল শরীরের মধ্যে থাকা ক্ষতিকর উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে। যদিও এটি খুব দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এছাড়াও শরীরের ইউরিক অ্যাসিড এর পরিমান নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।

ব্যথা উপশমে শশা (Relief Pain) – শশায় রয়েছে ফ্লেভনয়েড, ট্যানিন-সহ আরও নানা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা শরীরে ব্যথা উপশমে সাহায্য করে।

মাইগ্রেনের সমস্যায় (Reduce complication of Migraine) – শশা মাইগ্রেনের সমস্যায় কার্যকরী। তাই যাঁদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে তাঁরা দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় শশাকে যুক্ত করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *