ভারতের থোরিয়াম মজুদ: শক্তির নতুন অধ্যায়
ভারতের ভূগর্ভে লুকিয়ে আছে এমন এক শক্তির ভান্ডার, যা ভবিষ্যতে বিশ্বের জ্বালানি মানচিত্র বদলে দিতে পারে।
থোরিয়াম (Thorium) নামের এই উপাদানকে বিজ্ঞানীরা বলছেন “পরিচ্ছন্ন পারমাণবিক শক্তির ভবিষ্যৎ।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বের মোট থোরিয়াম মজুদের ৩০ থেকে ৫০ শতাংশই ভারতের কাছে রয়েছে। অর্থাৎ, পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক থোরিয়াম ভারতের মাটিতেই রয়েছে — যা এক বিশাল কৌশলগত সম্পদ।
⚡ তেল ও ইউরেনিয়ামের বিকল্প শক্তি হতে পারে থোরিয়াম
বর্তমানে পৃথিবীর শক্তি উৎপাদনের মূল উৎস হলো তেল, ইউরেনিয়াম, কয়লা ও প্রাকৃতিক গ্যাস। কিন্তু ভারতের থোরিয়াম সম্পদ থেকে এই সব উৎসের চেয়েও বেশি শক্তি উৎপাদন সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, থোরিয়াম যদি সঠিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কাজে লাগানো যায়, তবে এটি হবে *পরিষ্কার, নিরাপদ এবং দীর্ঘস্থায়ী জ্বালানি উৎস। এর ফলে ভারত হতে পারে বিশ্বের সবচেয়ে *জ্বালানি-স্বনির্ভর দেশ।
🧪 কেন এখনো থোরিয়াম ব্যবহারে পিছিয়ে ভারত?
তাহলে প্রশ্ন আসতেই পারে — এত বিপুল মজুদ থাকা সত্ত্বেও ভারত এখনো কেন থোরিয়ামকে বড় পরিসরে কাজে লাগাচ্ছে না?
এর মূল কারণ হল, থোরিয়ামভিত্তিক পারমাণবিক প্রযুক্তি এখনো গবেষণা ও উন্নয়নের পর্যায়ে রয়েছে। বিশ্বের অন্য কোনও দেশের কাছে বড় ভান্ডার না থাকায় এই প্রযুক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক গবেষণাও সীমিত। তাই ভারতকে নিজস্ব উদ্ভাবন ও দীর্ঘমেয়াদি গবেষণার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
🔬 ভারতের উদ্যোগ ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
ভারত ইতিমধ্যেই থোরিয়াম শক্তি ব্যবহার নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা প্রকল্প ও রিঅ্যাক্টর উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
পারমাণবিক শক্তি কমিশন ও বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্র থোরিয়ামকে বাস্তবে রূপ দিতে কাজ করছে।
বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, একবার থোরিয়াম প্রযুক্তি সফলভাবে বাণিজ্যিকভাবে চালু হলে, ভারত হয়ে উঠবে বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর ও জ্বালানি-স্বনির্ভর দেশ।
বিশ্ব যখন তেল ও গ্যাসের জন্য সংগ্রামে ব্যস্ত, ভারত তখন শান্তভাবে ধরে রেখেছে এক বিশাল শক্তির সম্ভাবনা — থোরিয়াম। যদি দেশটি এই সম্পদকে পূর্ণ মাত্রায় কাজে লাগাতে পারে, তবে ভারতীয় থোরিয়াম একদিন হয়ে উঠবে পৃথিবীর পরবর্তী শক্তির যুগের ভিত্তি।