নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: নবান্ন যাওয়ার (Nabanna Abhijan) প্রায় সব ছোট বড় রাস্তা সকাল থেকেই কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে। ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাস ছোট বড় গাড়ি। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ফাঁকা হয়ে গিয়েছে এলাকা। সকাল এগারোটা পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের দেখা পাওয়া না গেলেও নবান্নে পৌঁছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযানের ঘোষণার পর থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছিল পুলিশ। কখনও প্রেস কনফারেন্স করে সাধারণ মানুষকে এই আন্দোলন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। বোঝানো হয়েছে কোনও ফাঁদে যাতে কেউ পা না দেন। তবে একই সঙ্গে নবান্নে ঢোকার প্রায় সব রাস্তা সোমবার থেকেই বন্ধ করার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাস্তা খুঁড়ে লোহা, কাঠের খুঁটি পুঁতে ব্যারিকেড তৈরি করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও ঢালাই করে রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে ব্যারিকেড দিয়ে।
তিন দিন ছুটির পর সকাল থেকেই জেলার বহু মানুষ কাজের তাদিগে কলকাতা ঢুকছিলেন। কিন্তু পূর্ব পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে কলকাতা ঢোকার রাস্তা সকাল থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। সব বাসকেই ঘুরিয়ে দেওয়া হয় একটা সময়ের পর। ফলে সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ। তার উপর আজ ইউজিসি নেটের পরীক্ষাও রয়েছে। ফলে পরীক্ষার্থীরাও বহু জায়গায় সমস্যায় পড়েছেন।
আন্দোলনকারীদের আটকাতে জায়গায় জায়গায় জলকামানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মূল রাস্তাগুলিতে নজর রাখতে রাখা হচ্ছে ড্রোন। শুধু বড় সাতটি রাস্তা নয়, নবান্ন ঢোকার ছোট ছোট গলিতেও ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে। কারণ গতবারের নবান্ন অভিযান থেকে শিক্ষা নিয়েছে পুলিশ। সেবার গলি দিয়ে ছোট গাড়ি নিয়ে নবান্নের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা।
দুপুর একটায় দুটি জায়গায় জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। প্রথমে কলেজ স্কোয়ারে জমায়েত করে ইডেন গার্ডেনস, হেস্টিংস হয়ে হাওড়ার নবান্নে ঢোকার কথা। তার জন্য বড়বাড়ার সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় পুলিশ মাইকিং করছে। এবং সেখানে বলা হচ্ছে যাতে কোনও অশান্তি না হয়। তবে ইতিমধ্যেই সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার ফলে সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। দ্বিতীয় জমায়েত করার কথা সাঁতরাগাছিতে বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে নবান্নে যাওয়ার কথা মিছিলে। সেই রাস্তাতেও ব্যারিকেড বসানো হয়েছে জায়গায় জায়গায়। এমনকি দুদিকের রাস্তাতেই বড় বড় কন্টেনার দিয়েও ব্যারিকেট করা হচ্ছে।
কার্যত গোটা রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন যে ভাবে নবান্ন অভিযান আটকাতে ততপর তার একটি ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র অংশও যদি স্বাধীনতার রাতে আরজি করে দেখাত তাহলে সে দিন দুষ্কৃতীরা ঢুকে ভাঙচুর করতে পারত না? ফলে মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুর পরেই সেমিনার রুমের ভিড়ের যে ছবি ভাইরাল হয়েছে সোমবার, তার পর এই প্রশ্ন আরও জোরালো ভাবে উঠছে। পুলিশ কি তাহলে সেদিন ইচ্ছে করেই দুষ্কৃতীদের সেফ প্যাসেজ দিয়েছিল প্রমান লোপাটের জন্য?