হরষিত মজুমদার, সহ কৃষি অধিকর্তা, মন্তেশ্বর
আমন চাষের জন্য এই সময় তাপমাত্রার কোনও সমস্যা থাকে না। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বৃষ্টির কারণে বীজতলা সঠিক সময় তৈরি করতে পারেন না কৃষক বন্ধুরা। কিছু ক্ষেত্রে অতিবর্ষণের কারণে বীজতলা নষ্টও হয়ে যায়। চলতি ২০২৫-২৬ (খরিফ) মরশুমে এই সমস্যার সম্মুখীন কৃষক বন্ধুদের উদ্দেশ্যে একজন কৃষি বিজ্ঞানের ছাত্র ও আধিকারিক হিসাবে কিছু পরামর্শ।
যাদের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে বা ১০-১৫ দিন বয়সী চারা কিছুটা বেঁচে আছে সেখানে:
প্রথম স্প্রে- কার্বেন্ডিজম+ম্যান্কোজেব মিশ্রণ (স্প্রিন্ট, প্রভৃতি) @২.৫ গ্রাম / লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করলে সুফল পাবেন।
দ্বিতীয় স্প্রে- প্রথম স্প্রে এর ২ দিন পর, MOP- 100 gms, Thiovit 80 WG- 50 gms, Zn- EDTA (Chelamin)- 15 gms, বোরণ 20- 15 gms. এই মিশ্রণ ১৫ লিটার জলে গুলে স্প্রে করলে সুফল পাবেন।
যাদের বীজতলা পুরো নষ্ট হয়ে গেছে, কোনও ক্রমে প্রয়োজনের তুলনায় অল্প বীজ সংগ্রহ করতে পেরেছেন একটু জৈবসার বা ভালো পচানো গোবর বীজতলায় প্রয়োগ করুন ও প্রতি শতক বীজতলায় ১ কেজি বীজ হালকা করে ফেলুন।
আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে বৃষ্টি কম হওয়ার সম্ভাবনা। এই রকম পরিস্থিতিতে মডিফায়েড শ্রী পদ্ধতি উপযুক্ত।
১০-১২ দিনের কম বয়সী চারা, মাত্র ৩ কেজি বীজ ধানে ১৪ ইঞ্চি x ৭ ইঞ্চি স্পেসিং এ ধান চাষ করতে পারেন। ৯৮ বর্গ ইঞ্চিতে ৪টি চারা। লাইন থেকে লাইন দূরত্ব ১৪ ইঞ্চি হওয়ায় সহজেই দুই সারির মধ্যে কোনোউইডার চালানো যায়। আগাছানাশক বা জমি নিড়ানীর খরচ বেঁচে যায়। কম জল, বীজ, সার ও কীটনাশক লাগে।
শ্রী পদ্ধতিতে- স্পেসিং ১০ ইঞ্চি x ১০ ইঞ্চি = ১০০ বর্গ ইঞ্চি। মডিফাইড শ্রী থেকে শ্রী পদ্ধতির স্পেসিং ২ বর্গ ইঞ্চি বেশি এবং কোনোউইডার সঠিক ভাবে চালানো যায় না।
শ্রী ও মডিফাইড শ্রী- উভয় পদ্ধতির ফলন অধিক ও খরচ কম। প্রকৃত লাভ অধিক এমনকি দ্বিগুনেরও বেশি হতে পারে এবং পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি।