শুভেন্দুর পায়ে প্রণাম, হাতে পদ্মফুল — নোয়াপাড়ায় সুনীল সিংকে ঘিরে ফের দলবদলের জল্পনা

নিজস্ব সংবাদদাতা: উত্তর ২৪ পরগনার নোয়াপাড়ার তৃণমূল নেতা এবং প্রাক্তন বিধায়ক সুনীল সিংকে ঘিরে ফের জোরালো হয়েছে দলবদলের জল্পনা। ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। তারই মাঝে বৃহস্পতিবার রাতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সুনীলের সৌজন্য সাক্ষাত দলবদলের জল্পনার কেন্দ্রে।

গারুলিয়াতে শুভেন্দুর এক রাজনৈতিক সভা শেষে ফেরার পথে তাঁর গাড়ি দেখতে পান সুনীল সিং। তিনি হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান, আর শুভেন্দুও গাড়ি থামিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। সাক্ষাতের সময় প্রাক্তন বিধায়ককে দেখা যায় শুভেন্দুর পায়ে প্রণাম করতে, আর শুভেন্দু তাঁকে সস্নেহে জড়িয়ে ধরেন। পরে শুভেন্দুর কাছ থেকে একটি পদ্মফুলও পান সুনীল।

এই দৃশ্যই মুহূর্তে রাজনীতির ময়দানে নতুন কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, তিনি কি আবার বিজেপিমুখী? তবে সুনীল সিং নিজেই জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “শুভেন্দু অধিকারী আমাকে দেখে নিজেই ডাকলেন। আমরা একসঙ্গে বিধানসভায় কাজ করেছি, তাই সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি মাত্র। এতে কোনও রাজনৈতিক ইঙ্গিত নেই।” তিনি আরও বলেন, “পদ্মফুলটা শুভেন্দুর গাড়িতে ছিল, উনি হাতে তুলে দিলেন। আমি সেটি পরে এক বিজেপি কর্মীকে দিয়ে দিয়েছি।”

উল্লেখ্য, সুনীল সিং তৃণমূলের টিকিটে ২০১৬ সালে নোয়াপাড়া থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর তৃণমূল ক্ষমতায় ফিরলে, ২০২২ সালে আবার নিজের পুরনো দলে ফেরেন।

রাজনৈতিক মহল বলছে, ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংয়ের (যিনি সুনীলের ভগ্নিপতি) মতোই তিনি দলবদলের ইতিহাসে পরিচিত মুখ। তাই তাঁর সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে অনেকেই ভবিষ্যতের ইঙ্গিত হিসেবেই দেখছেন।

তবে সুনীল নিজেই বলেছেন, “রাজনীতিতে সব কিছু সম্ভব। মানুষ যাঁকে চাইবেন, তিনিই মুখ্যমন্ত্রী হবেন — সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও হতে পারেন, আবার শুভেন্দু অধিকারীও হতে পারেন।”

তৃণমূলের অন্দরে এই মন্তব্য নিয়ে এখন নানান ব্যাখ্যা চলছে। দলের অনেকেই বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিলেও, রাজনৈতিক মহল মনে করছে— নোয়াপাড়ার রাজনীতিতে ফের একবার অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *