নিজস্ব সংবাদদাতা, তাজপুর: তৃণমূল (TMC) শাসনে বেনজির ঘটনা, মহিলা রেঞ্জ অফিসারকে কুকথা বলে পদত্যাগ করতে হল কারামন্ত্রী অখিল গিরিকে (Akhil Giri Controversy)। পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরে বন দফতরের কাঁথি রেঞ্জ অফিসার আধিকারিক মনীষা সাউকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করা, হুমকি দেওয়ার ঘটনায় জল অখিলের পদত্যাগ পর্যন্ত গড়াল। পদত্যাগ করলেও তিনি অনুতপ্ত নন এবং মহিলা অফিসারের কাছে ক্ষমা চাইবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।
অখিল গিরি ও মহিলা আধিকারিকের বাদানুবাদের ভিডিও ভাইরাল হতেই চাপ বাড়ছিল কারামন্ত্রীর উপর। মহিলা আধিকারিকের কাছে ক্ষমা চাইতে এবং পদত্যাগ করতে বলা হয় তাঁকে। কিন্তু প্রথমে তিনি তাতে রাজি হননি। কিন্তু এবার আর অখিল গিরিকে নিয়ে বিড়ম্বনার দায় দল নিতে চাইছে না। অখিলের পদত্যাগের আগে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে গ্রেফতারের দাবিও তোলা হয় বিরোধী দলগুলির তরফে।
শনিবার ঘটনার সূত্রপাত। তাজপুর জানা ২০ দোকানদার সৈকতের দিক থেকে বন দফতরের জমির দিকে দোকান পিছিয়ে আনার চেষ্টা করেন। বন দফতরের জমি বেদখল হওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য সেই কাজে বাধা দেন রেঞ্জার মনীষা সাউ। তার পরই বিষয়টি নিয়ে মাঠে নামেন অখিল গিরিও। তাঁর দাবি, ভাঙনের মুখে পড়ছেন ওই দোকানদাররা। কিছু দিনের জন্য তাঁরা বন দফতের জায়গায় বসলেও বাঁধ মেরামত হয়ে গেলেই তাঁরা সরে যাবেন। কিন্তু সে কথা নাকি শুননতে চাননি রেঞ্জার। তার পরই উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি।
অখিল গিরির বিতর্কিত মন্তব্য।
ক্যামেরায় ধরা পড়ছে সেই উত্তপ্ত বাদানুবাদ। যেখানে মহিলা রেঞ্জ অফিসারকে জানোয়ার, বেয়াদপ এমনকি ডাং দিয়ে পেটানোর হুমকি দেন। শুধু তাই নয় ওই রেঞ্জ অফিসারের আয়ু আর ৭ থেকে ১০ দিন বলেও মন্তব্য করতে শোনা যায় অখিল গিরিকে।
এই ভিডিও ভাইরাল হতেই বিরোধী দল এবং সাধারণ মানুষের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তৃণমূল কংগ্রেস এবং অখিল গিরিকে। দলের তরফে তার পরই কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেওয়া হয়। প্রথমে তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলা হলেও তাতে তিনি রাজি হননি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভা থেকে সরে যেতে হল।
২০১১ সাল থেকে একাধিক নেতা মন্ত্রী নানা বিতর্কে জড়ালেও তা পদত্যাগ বা মন্ত্রিত্ব থেকে বরখাস্তের যায়গায় জায়নি। কিন্তু ২০২১ সালে মন্ত্রী হওয়া অখিল গিরি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদি মুর্মূর প্রসঙ্গেও কুরুচিকর মন্তব্য করেন। তার পরেও তিনি ক্ষমা চাননি। তাঁর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।