Buddhadeb Bhattacharya: ধপধপে সাদা পাঞ্জাবিতেই চলে গেলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আজ সকালে প্রয়াত হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Former West Bengal chief minister buddhadev Bhattacharya died)। পাম এভিনিউয়ের নিজের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। দীর্ঘদিন ফুসফুসে সংক্রমনে ভুগছিলেন তিনি।

এখন তাঁর মরদেহ পাম অ্যাভিনিউয়েত বাসস্থানেই থাকবে। তাঁর শেষ ইচ্ছানুযায়ী চক্ষুদানের ব্যবস্থা হয়েছে।দুপুর ১২:৩০ টার সময়ে পিস ওয়ার্ল্ডে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে। আগামিকাল সকাল ১০:৩০ থেকে ৩১, আলিমুদ্দিন স্ট্রিট, সিপিআই(এম) রাজ্য দপ্তর মুজফফর আহমদ ভবনে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য শায়িত থাকবে তাঁর মরদেহ। এরপর সেখান থেকেই বিকেল ৪টে নাগাদ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মরদেহ নিয়ে শোক মিছিল করে। নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজে মরণোত্তর দেহদান করা হবে।

২০০১ সাল থেকে ২০১১ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী তো সামলেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তার আগে জ্যোতি বসুর মন্ত্রিসভায় উপমুখ্যমন্ত্রী এবং তারও আগে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। ২০১১ সালে রাজ্য থেকে বামফ্রন্ট বিদায়ের সময় যাদবপুর থেকে তিনিও হেরে যান। হেরে গেলেও সক্রিয় রাজনীতিতে তার ভূমিকা ছিল অপরিহার্য। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে ধীরে ধীরে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে আসেন তিনি। ২০২৪ এর ৭ জানুয়ারি DYFI এর ব্রিগেডের আগে সংগঠনের নেতৃত্বরা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাড়িতে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তার স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন চোখের সমস্যার জন্য বদলে ভট্টাচার্য নিজে পড়তে না পারলেও তাকে রোজ খবরের কাগজে সমস্ত খুঁটিনাটি পড়ে শোনাতে হতো, বিশেষ করে রাজনীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলি।

মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরই ‘কৃষি আমাদের ভিত্তি শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ’ নীতি কে সামনে রেখে রাজ্যে শিল্পায়নকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। তাঁর হাত ধরে টাটার মত সংস্থা মধ্যবিত্তদের জন্য একলাখী গাড়ি প্রকল্প ন্যানোর কারখানা পশ্চিমবঙ্গের হুগলি সিঙ্গুর স্থাপন করে। কিন্তু তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূলের আন্দোলনের ফলে সেই কারখানা গুজরাটের সানন্দে সরে যায়। ভেঙে পড়ে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষিত বেকার যুবসমাজ। রাজনৈতিক সংঘর্ষের মতো পরিস্থিতি এড়াতেই বিক্ষোভ অবরোধ আন্দোলনকে দমন করার কোন চেষ্টা করেননি। বারবার বিরোধীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন এই প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গের জন্য কতটা প্রয়োজন যুব সমাজের ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের জন্য কতটা প্রয়োজন। কিন্তু তার সেই সব প্রচেষ্টা পরাজিত হয় বিরোধীদের রাজনীতির কারণে।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ক্ষমতায় থাকার সময় বা পরাজিত হওয়ার পরেও তার ভাবমূর্তি নানাভাবে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হয়েছে কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই সমস্ত মিথ্যাচার মানুষের সামনে উন্মোচিত হয়ছে। তাঁর সততা নীতি পরায়ণতা যে তাঁর দুধ সাদা ধুতি পাঞ্জাবির পরিষ্কার তা রাজ্যের সর্বস্তরের সর্বক্ষেত্রের মানুষ প্রকাশ্যেই স্বীকার করেছেন। ২০১১ বামফ্রন্ট হেরে যাওয়ার পরেও তিনি বাম ইভিনিং এর তার নিজস্ব দোকান ঘরেই থাকতেন। কোনরকম বিলাসবহুলতা দেখা যায়নি। মানুষের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণে সর্ব ধর্ম বর্ণ রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষ শোক প্রকাশ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *